۲۶ آذر ۱۴۰۳ |۱۴ جمادی‌الثانی ۱۴۴۶ | Dec 16, 2024
‘গ্রেট ইসরায়েল’ গঠনে মার্কিন ও তুর্কি সহযোগিতামূলক ষড়যন্ত্র
‘গ্রেট ইসরায়েল’ গঠনে মার্কিন ও তুর্কি সহযোগিতামূলক ষড়যন্ত্র

হাওজা / ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে সেই একই কারণে যায়ওনবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাঈল ও তার পৃষ্ঠপোষক সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা আসাদ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে যুগ যুগ ধরে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো এবং শেষ পর্যন্ত মুনাফিক্ব এরদোগানের সহায়তায় এতে সফল হয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন এরশাদ করেন:

إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

“নিঃসন্দেহে কঠিনতার সাথে সহজতা রয়েছে।” (সূরাহ্ আল্-ইনশিরাহ্: ৬)

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের অভিযান শুরু হবার পর মাত্র ১১ দিনের মাথায় প্রায় বিনা প্রতিরোধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল্-আসাদের ক্ষমতা ত্যাগ প্রথমে আরো অনেকের মতো আমাকেও স্তম্ভিত করে দিয়েছিলো। কারণ, উন্নত সমরাস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার হাতে থাকা সত্ত্বেও এবং তিনি চাইলে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তাঁকে সর্বাত্মক সামরিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের জন্য প্রস্তুত থাকলেও তিনি ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মোটেই চেষ্টা করেননি। কেন? এ প্রশ্নের জবাব পেতে হলে সিরিয়ার জনগণের নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় গঠন এবং বাশার আল-আসাদের ও তাঁর পূর্বে তাঁর পিতা হাফিজ আল-আসাদের ক্ষমতার ভিত্তির প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে।

অনেক লোকের মাথায়ই যুগের পর যুগ ধরে এ প্রশ্ন জাগ্রত ছিলো যে, সুন্নী-প্রধান দেশ সিরিয়ায় শিয়া হাফিজ আল-আসাদ ও বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় কেন? (অবশ্য শতকরা ৬৫ ভাগ আরব শিয়া মুসলমান, ১৮ ভাগ কুর্দী সুন্নী মুসলমান ও ১২ ভাগ আরব সুন্নী মুসলমানের দেশ ইরাকে যখন আরব সুন্নী বংশোদ্ভূত নাস্তিক কমরেড সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতা দখল করে ছিলেন তখন তাঁদের মনে এ প্রশ্ন জাগ্রত হয়নি।)

এ প্রশ্নের জবাব দিতে হলে প্রথমেই সিরিয়ার জনগণের নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয়-মাযহাবী গঠনের প্রতি সংক্ষেপে দৃষ্টিপাত করতে হয়।

সিরিয়া একটি বহু নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয়-মাযহাবী জনগোষ্ঠীর দেশ। আন্তর্জাতিক মাধ্যমে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে সিরিয়ার জনগণের শতকরা ৭৫ ভাগ আরব, ১০ ভাগ কুর্দী ও ১৫ ভাগ অন্যান্য গোষ্ঠীর লোক; শেষোক্ত ১৫ ভাগের মধ্যে রয়েছে তুর্কামান, আশূরী, আর্মেনীয় ও অন্যান্য জনগোষ্ঠী। আর ধর্মীয় ও মাযহাবী দিক থেকে দেশটির জনগণের মধ্যে শতকরা ৭৪ ভাগ সুন্নী, ১১ ভাগ ‘আলাভী, ১০ ভাগ খৃস্টান, ৩ ভাগ দ্রুজ, ১ ভাগ ইসমা‘ঈলী ও ০.৫ ভাগ বারো ইমামী শিয়া এবং শতকরা ০.৫ ভাগ অন্যান্য ক্ষুদ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর অনুসারী। ৭৪ ভাগ সুন্নীর মধ্যে আরব ৬৪ ভাগ ও কুর্দী ১০ ভাগ। সিরিয়ার সদ্য পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট বাশার আল্-আসাদ ও তাঁর পিতা হাফিজ আল্-আসাদ জন্মসূত্রে আলাভী।

এখানে উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, ‘আক্বাইদের দিক থেকে সুন্নী ও বারো ইমামী শিয়ার মধ্যে পার্থক্য যতোখানি শিয়া ধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে উদ্ভূত ‘আলাভী, ইসমা‘ঈলী ও দ্রুজদের সাথে সুন্নী ও বারো ইমামী শিয়াদের পার্থক্য তার চেয়ে অনেক বেশী – যে কারণে বারো ইমামী শিয়ারা বিশেষত: ‘আলাভীদেরকে মুসলমান মনে করে না। এমতাবস্থায় এখানে কয়েকটি প্রণিধানযোগ্য বিষয় রয়েছে।

স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সিরিয়া একটি (ধর্মসম্পর্কহীন) সেক্যুলার সরকার শাসিত দেশ। আর একজন সেক্যুলার শাসক কোন্ ধর্মের বা মাযহাবের পরিচিতিধারী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন তার কোনো গুরুত্ব নেই। কেবল নির্বোধ লোকেরাই এ ধরনের শাসকদেরকে ধর্মীয় ও মাযহাবী পরিচিতির ভিত্তিতে বিচার করে থাকে।

ফলতঃ ‘আলাভীরা আসাদের শাসনক্ষমতার ভিত্তি ছিলো এটা মনে করা চরম নির্বুদ্ধিতার কাজ। বরং রাজনৈতিক স্বার্থে সুন্নী, ‘আলাভী ও সুন্নী-কুর্দীদেরও একটি বিরাট অংশ হাফিজ আল-আসাদের ও পরে বাশার আল-আসাদের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলো। কারণ, এতদ্ব্যতীত তাদের মধ্যে সর্বজনগ্রহণযোগ্য কোনো নেতৃত্ব ছিলো না।

বিষয়টিকে বাংলাদেশের অবস্থার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। দলের মধ্যে সর্বজনগ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বের অভাবের কারণে আওয়ামী লীগ যখন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিলো তখন ড. কামাল হোসেনের প্রস্তাবে বিদেশে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দলের প্রধান নির্বাচিত করায় দলটি ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পায়; তখন থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বস্তুতঃ মুজিব-পরিবারের নেতৃত্ব ব্যতীত আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধতা ও অর্থবহ অস্তিত্ব অকল্পনীয়। একইভাবে সর্বজনগ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিএনপি-র ঐক্যবদ্ধতা ও অর্থবহ অস্তিত্ব অকল্পনীয় ছিলো বিধায়ই গৃহবধূ বেগম খালেদা জিয়ার হাতে দলটির নেতৃত্ব অর্পণ করা হয় এবং তাঁর পরে এ নেতৃত্ব যে তারেক রহমানের তা-ও সুস্পষ্ট।

একইভাবে বহু নৃতাত্ত্বিক, ধর্মীয় ও মাযহাবী জনগোষ্ঠীর দেশ সিরিয়ার অখণ্ডত্ব ও ঐক্যের স্বার্থে এবং অভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবেই হাফিজ আল্-আসাদকে ও বাশার আল্-আসাদকে শাসনক্ষমতায় রাখা ব্যতীত গত্যন্তর ছিলো না। একই কারণে, ফিলিস্তিনী জনগণের সপক্ষে অটল পাহাড়ের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকা সিরিয়ার সেক্যুলার সরকারকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান শুরু থেকেই সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছিলো।

এখানে প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, শুরু থেকেই ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম প্রধান নীতি ফিলিস্তিনকে মুক্তকরণ বিধায় ফিলিস্তিনী মুসলমানরা সুন্নী হওয়া সত্ত্বেও ইরান তাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছে। স্মর্তব্য যে, বিপ্লবের পরে ফিলিস্তিনে যারা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছিলো তাদের মধ্যে খৃস্টান নেতা জর্জ হাবাশের দল

Marxist–Leninist Popular Front for the Liberation of Palestine (PFLP) ছিলো অন্যতম এবং ইসলামী ইরান এ দলটিকেও সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে।

যে কারণে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে সেই একই কারণে যায়ওনবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাঈল ও তার পৃষ্ঠপোষক সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা আসাদ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে যুগ যুগ ধরে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো এবং শেষ পর্যন্ত মুনাফিক্ব এরদোগানের সহায়তায় এতে সফল হয়েছে।

এ ব্যাপারে নতুন করে প্রমাণ উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই যে, ইতিপূর্বেকার তথাকথিত আইএস গঠিত হয়েছিলো সিআইএ-র পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং বর্তমান হাইআতে তাহরীরিশ্ শাম্ (هيئة تحرير الشام )ও গঠিত হয়েছে সিআইএ-র দ্বারা এবং আমেরিকা ও ইসরাঈলের পদলেহী মুনাফিক্ব এরদোগানের সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতায় তারা সিরিয়ার ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে হাইআতে তাহরীরিশ্ শাাম্ (এইচটিএম) আসাদ-বিরোধী অভিযান চালাবার সময় ইসরাঈলের কাছে সাহায্য চায় এবং ইসরাঈলও এতে সাড়া দিয়ে সিরিয়ার ইসরাঈল-লেবানন সীমান্তবর্তী বেশ কিছু এলাকা দখল করে নেয়।

বাশার আল-আসাদ ছিলেন সিরিয়ার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডত্ব ও ইসরাঈল বিরোধী চেতনার প্রতীক। কিন্তু সিআইএ-নিয়ন্ত্রিত অন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমের প্রচারে প্রভাবিত হয়ে সিরিয়ার জনগণের একটি বিরাট নির্বোধ অংশ মাযহাবী দৃষ্টিকোণ থেকে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় তিনি ব্যাপক রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা না করাকেই অগ্রাধিকার প্রদান করেন।

প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এইচটিএস-নেতা আহমাদ আশ্-শারা‘ (যিনি আবু মুহাম্মদ আল-জূলানী নামেও পরিচিত) গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৪) সিরিয়ার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা করেন। আল-জালালী এইচটিএস-গঠিত সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট (এসএসজি)-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছেন।

এদিকে বাশার আল-আসাদের বিদায়ের পরেও ইসরাঈলী বাহিনী সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত রোববার থেকে এখন (১০ ডিসেম্বর মঙ্গল বার দুপুর) পর্যন্ত ইসরাঈল সিরিয়ায় অন্তত ৩১০ বার হামলা চালিয়েছে এবং অধিকৃত গোলান মালভূমির কাছে সিরিয়ার আরো ভূখণ্ড দখল করেছে। এ ছাড়া ইসরাঈলী বাহিনী সিরিয়ার আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দখল করা অব্যাহত রেখেছে এবং আজ (১০ ডিসেম্বর মঙ্গল বার) ইসরাঈলী বাহিনী ইতিমধ্যেই দামেস্কের প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে পৌঁছেছে।

যদিও বাশার আল্-আসাদের ক্ষমতা ত্যাগের ফলে সিরিয়ায় সংঘাতের অবসান ঘটেছে, কিন্তু এতদসত্ত্বেও ইসরাঈলী বাহিনী কর্তৃক সিরীয় এলাকা দখল অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ইসরাঈলের পক্ষ থেকে হাস্যষ্করভাবে বলা হয়েছে যে, ইসরাঈল নিজেকে সিরিয়ার সংঘাতে জড়াবে না এবং দখলকৃত এলাকাকে বাফার যোন হিসেবে দাবী করে বলেছে যে, বাফার যোন দখল করা তার প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ (!)।

সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট (এসএসজি)-এর সামনে কয়েকটি সমস্যা সুস্পষ্ট দৃশ্যমান:

দেশটির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডত্ব রক্ষার দায়িত্ব এখন নতুন সরকারের। বাংলাদেশ সহ বহির্বিশ্বের অনেক নির্বোধ লোক সিরিয়ায় তথাকথিত সুন্নী খেলাফত ক্বাএমের যে আশায় বসে আছে তা সুদূরপরাহত বলেই মনে হয়। কারণ, এবারে যারা ক্ষমতা দখল করেছে তাদের মধ্যে সিআইএ-র প্রত্যক্ষ মদদে গঠিত উগ্র তাকফীরী গোষ্ঠী ছাড়াও সিআইএ-র প্রত্যক্ষ মদদে ইতিপূর্বে গঠিত সেক্যুলার ফ্রী সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ)ও অংশীদার ছিলো। কিন্তু তথাকথিত ইসলামী খেলাফত ক্বাাএম হোক বা না হোক, সিরিয়ার সধারণ জনগণ তাদের দেশের ভূখণ্ডের একটি অংশকে যায়ওনবাদী ইসরাঈলের দখলে থাকাকে মেনে নেবে না এবং সরকারের কাছে তা পুনরুদ্ধারের দাবী জানাবে নিঃসন্দেহে।

অন্যদিকে সিআইএ কুর্দী অধ্যুষিত ভূখণ্ডে একটি স্বাধীন কুর্দী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও তুরস্কের কুর্দীদের যে প্রলোভন দিয়ে আসছে অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বৃটিশ অধিকৃত এলাকাকে টুকরো টুকরো করে অনেক রাষ্ট্র গঠন করলেও অত্যন্ত সহজেই কুর্দী রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও তা করেনি এবার তা গঠনের জন্য নতুন করে প্রচেষ্টা চলবে তাতে সন্দেহ নেই। অবশ্য ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার কুর্দী এলাকায় সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে কুর্দীদের মধ্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা দূর করতে সক্ষম হয়েছে।

অন্যদিকে সাদ্দাম-উত্তর ইরাকের সংখ্যাগুরু শিয়াদের নেতৃবৃন্দও সাদ্দামের দ্বারা নির্যাতিত কুর্দীদের জন্য সাংবিধানিকভাবে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করায় তাদের মধ্যেও বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতার অবসান ঘটেছে। কিন্তু সিরিয়া ও তুরস্কের কুর্দীদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা পূর্ববত অব্যাহত আছে। এমতাবস্থায় নতুন পরিস্থিতিতে এ দু’টি দেশের কুর্দী এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা জোরদার হবার খুবই আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু একদিকে যেমন

শক্তির জোরে বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন করা হলে তাকে ভণ্ডামিপূর্ণ শিয়া-সুন্নী রং দেয়া সম্ভব হবে না, অন্যদিকে সিআইএ-র মদদে কুর্দী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সফল হলে সিরিয়া ও তুরস্কের সংখ্যাগুরু আরব ও তুর্কী জনগণ তা মেনে নেবে না এবং সে জন্য নিজ নিজ সরকারকে দায়ী করবে।

সর্বোপরি, ভণ্ডামিপূর্ণ শিয়া-সুন্নী ধুয়া তুলে বাশার আল-আসাদ বিরোধী যে ভাবাবেগ তৈরী করা হয়েছে বাশারের অনুপস্থিতিতে অচিরেই তা শীতল হয়ে যাবার পর, বিশেষতঃ সিরীয় ভূখণ্ডের একটি অংশ ইসরাঈলের দখলে চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সিরীয় জনগণের অন্ততঃ অংশবিশেষের মধ্যে যায়ওনবাদ-বিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধ অন্দোলন গড়ে উঠবে বলে আশা করা যায়।

(জনাব নূর হোসাইন মাজিদি, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক বিশারদ)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .